বাংলাদেশ সরকার নাগরিকদের জন্য তিন ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে: লাল মলাট (কূটনৈতিক), নীল মলাট (দাপ্তরিক), এবং সবুজ মলাট (সাধারণ)। বিশ্বে বাংলাদেশী পাসপোর্টের অবস্থান ১১৯তম। সাধারণ নাগরিকগণ সাধারণত সবুজ মলাটের পাসপোর্টই ব্যবহার করে থাকেন।
একজন নাগরিক ১০ বছর এবং ৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে পারেন, যার মধ্যে ৪৮ পৃষ্ঠার এবং ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্টের অপশন রয়েছে। আজকের আলোচনায় আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য।
পাসপোর্টের ধরন ও মেয়াদ
যারা জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট পেতে চান, তাদের জন্য তিনটি ক্যাটাগরি রয়েছে:
- সাধারণ: ২১ কর্মদিবস
- জরুরী: ১০ কর্মদিবস
- অতি জরুরী: ২ কর্মদিবস
প্রত্যেকটি ক্যাটাগরির জন্য আলাদা আলাদা ফি নির্ধারিত রয়েছে।
১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট
১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্য সাধারণত তিনটি প্রকারের সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে: সাধারণ (২১ কর্মদিবস), জরুরী (১০ কর্মদিবস), এবং অতি জরুরী (২ কর্মদিবস)।
ফি তালিকা
- ৪৮ পৃষ্ঠা সাধারণ পাসপোর্ট: – সাধারণ ফি: ৫,৭৫০ টাকা – জরুরী ফি: ৮,০৫০ টাকা – অতি জরুরী ফি: ১০,৩৫০ টাকা
- ৬৪ পৃষ্ঠা সাধারণ পাসপোর্ট: – সাধারণ ফি: ৮,০৫০ টাকা – জরুরী ফি: ১০,৩৫০ টাকা – অতি জরুরী ফি: ১৩,৮০০ টাকা
৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট
৫ বছর মেয়াদী পাসপোর্টের জন্যও ৪৮ এবং ৬৪ পৃষ্ঠার অপশন রয়েছে। তবে এখানে শুধুমাত্র সাধারণ ফি প্রদানের অপশনটি আলোচনা করা হলো।
ফি তালিকা
- ৪৮ পৃষ্ঠা সাধারণ পাসপোর্ট: – সাধারণ ফি: ৪,০২৫ টাকা – জরুরী ফি: ৬,৩২৫ টাকা – অতি জরুরী ফি: ৮,৬২৫ টাকা
- ৬৪ পৃষ্ঠা সাধারণ পাসপোর্ট: – সাসাধারণ ফি: ৬,৩২৫ টাকা – জরুরী ফি: ৮,৬২৫ টাকা – অতি জরুরী ফি: ১২,০৭৫ টাকা
পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া
পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া বেশ সহজ এবং সরল। তবে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিচে বিস্তারিত ভাবে পাসপোর্ট আবেদন করার ধাপগুলো উল্লেখ করা হলো:
- ধাপ ১: অনলাইন আবেদনঃ প্রথমে আপনাকে অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করা যাবে।
- ধাপ ২: প্রয়োজনীয় নথিপত্রঃ আবেদন ফর্ম পূরণ করার পর প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করতে হবে। যেমন:
- জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি অথবা জন্ম সনদের কপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ধাপ ৩: আবেদন ফি প্রদানঃ নির্ধারিত ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আবেদন ফি প্রদান করতে হবে। ব্যাংক চালানের কপি বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের রিসিট সংরক্ষণ করুন।
- ধাপ ৪: বায়োমেট্রিক গ্রহণঃ অনলাইন ফর্ম জমা দেওয়ার পর নির্ধারিত অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ এবং ছবি) সংগ্রহ করতে হবে।
- ধাপ ৫: আবেদন প্রক্রিয়াকরণঃ সকল তথ্য যাচাইয়ের পর আপনার পাসপোর্ট প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট আপনার ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।
প্রয়োজনীয় তথ্য ও নির্দেশিকা
- ১. পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে নবায়ন আবেদন করতে হবে।
- ২. সকল তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে, ভুল তথ্য প্রদানের কারণে আবেদন বাতিল হতে পারে।
- ৩. হারানো পাসপোর্টের জন্য পুলিশ রিপোর্ট ও অতিরিক্ত ফি প্রয়োজন হতে পারে।
শেষ কথা
আশা করি এই বিশদ নির্দেশিকা থেকে আপনি বাংলাদেশে ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এবং কিভাবে আবেদন করতে হয় তা ভালোভাবে জানতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি আপনার জন্য উপকারী হয়ে থাকে, তবে আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও উপকৃত করতে পারেন। ধন্যবাদ।