নারিশ ফিড দাম কত ২০২৪

নারিশ ফিড দাম কত

বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পে নারিশ পোল্ট্রি ফিড এবং হ্যাচারি লিমিটেড কোম্পানি এক উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে আছে। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। নারিশ পোল্ট্রি ফিড কোম্পানির প্রধান লক্ষ্য হলো পোল্ট্রি শিল্পের প্রতিটি স্তরে মানসম্পন্ন খাদ্য সরবরাহ করে খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন সাধন করা। এ নিবন্ধে আমরা নারিশ পোল্ট্রি ফিড এবং হ্যাচারি লিমিটেডের উৎপাদিত বিভিন্ন ফিডের প্রকারভেদ এবং তাদের বাজার মূল্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আমরা আরও জানবো কিভাবে নারিশ কোম্পানি বাংলাদেশের পোল্ট্রি, মাছ এবং গবাদিপশুর খাদ্য উৎপাদনে অবদান রাখছে এবং কিভাবে এই ফিডগুলো দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

নারিশ ফিড দাম কত

নারিশ পোল্ট্রি ফিড কোম্পানি বিভিন্ন প্রকারের পোল্ট্রি এবং গবাদিপশুর জন্য ফিড উৎপাদন করে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পণ্যের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:

  • ব্রয়লার ফিডঃ ব্রয়লার মুরগির দ্রুত বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে নারিশ কোম্পানি ব্রয়লার ফিড সরবরাহ করে। এই ফিডের মধ্যে প্রি-স্টার্টার, গ্রোয়ার এবং ফিনিশার ফিড অন্তর্ভুক্ত থাকে। বর্তমান বাজারে নারিশ ব্রয়লার ফিডের দাম সাধারণত ৩৫০০ থেকে ৩৮০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, যা মুরগির দ্রুত বৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে।
  • লেয়ার ফিডঃ লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নারিশ কোম্পানি লেয়ার ফিড সরবরাহ করে। এই ফিড লেয়ার মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। নারিশ লেয়ার ফিডের দাম ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে পরিবর্তনশীল।
  • সোনালী ফিডঃ সোনালী মুরগির খাদ্য হিসেবে নারিশ সোনালী ফিড জনপ্রিয়। এই ফিড সোনালী কক গ্রোয়ার হিসেবে বাজারে পাওয়া যায় এবং এর দাম সাধারণত ৩০০০ থেকে ৩৩৫০ টাকার মধ্যে থাকে।
  • মাছের ফিডঃ মাছ চাষীদের জন্য নারিশ কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের ফিশ ফিড সরবরাহ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভাসমান তেলাপিয়া ফিড, পাঙ্গাস ফিড এবং ফ্লোটিং স্টার্টার ফিড। মাছের খাদ্যের দাম ৯০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
  • গবাদিপশুর ফিডঃ গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে নারিশ ক্যাটল ফিড ব্যবহার করা হয়। এটি গরুর মাংস উৎপাদনে সহায়ক। বর্তমানে নারিশ ক্যাটল ফিডের দাম ১৩৫০ থেকে ১৩৮৯ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

নারিশ ফিডের বাজার চাহিদা এবং সরবরাহ

বাংলাদেশে নারিশ ফিডের বাজার চাহিদা এবং সরবরাহের দিক থেকে প্রতিষ্ঠানটি অন্যতম। ফিডের গুণগত মান এবং সঠিক পুষ্টির কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি খামারীদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়।

  • বাজারে নারিশ ফিডের চাহিদাঃ নারিশ ফিডের চাহিদা ক্রমবর্ধমান, কারণ এটি পোল্ট্রি এবং গবাদিপশুর স্বাস্থ্যকর এবং দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। বিশেষ করে ব্রয়লার এবং লেয়ার খামারীরা নারিশ ফিড ব্যবহার করে তাদের উৎপাদন বাড়াতে সক্ষম হচ্ছে।
  • সরবরাহ নেটওয়ার্কঃ নারিশ ফিডের সরবরাহ নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ জুড়ে বিস্তৃত। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফিডের সরবরাহ নিশ্চিত করে খামারীদের চাহিদা পূরণ করে থাকে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি উন্নত সরবরাহ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফিড পৌঁছে দেয়।

নারিশ ফিডের মান এবং নিরাপত্তা

নারিশ কোম্পানির প্রতিটি ফিড আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং গুণগত মান বজায় রেখে তৈরি করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ফিড উৎপাদনে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি এবং উপকরণ ব্যবহার করে। পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর খাদ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে গবেষণা এবং উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে।

  • গুণগত মান নিশ্চিতকরণঃ নারিশ ফিড তৈরির সময় সকল প্রকার সুরক্ষা এবং মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়। প্রতিটি ফিড প্রস্তুতির সময় পরীক্ষা এবং নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে, এতে কোনো প্রকার ক্ষতিকারক উপাদান নেই।
  • নিরাপত্তা নির্দেশিকাঃ ফিড সংরক্ষণ এবং পরিবহন প্রক্রিয়ায় নারিশ কোম্পানি কড়া নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলে। ফিডের প্যাকেজিং এবং সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ধাপেই মান নিয়ন্ত্রণের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

নারিশ ফিডের অর্থনৈতিক প্রভাব

নারিশ ফিড শুধুমাত্র পোল্ট্রি এবং গবাদিপশুর খাদ্য সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।

  • কর্মসংস্থান সৃষ্টিঃ নারিশ ফিড উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। ফিড প্রস্তুতি থেকে শুরু করে সরবরাহ প্রক্রিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে বহু লোকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হয়।
  • গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নঃ নারিশ ফিড গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রামীণ এলাকার খামারীরা এই ফিড ব্যবহার করে তাদের খামার কার্যক্রম উন্নয়ন করতে পারে, যা তাদের আয় বাড়ায় এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
  • রপ্তানি সম্ভাবনাঃ নারিশ ফিডের গুণগত মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত, যা রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়ায়। ফিডের মান এবং নিরাপত্তার কারণে বিদেশি বাজারেও নারিশ ফিডের চাহিদা বাড়ছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক।

শেষ কথা

নারিশ পোল্ট্রি ফিড এবং হ্যাচারি লিমিটেড কোম্পানি বাংলাদেশের পোল্ট্রি এবং গবাদিপশু শিল্পে একটি অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে। তাদের ফিডের গুণগত মান এবং বৈচিত্র্য দেশের পোল্ট্রি এবং গবাদিপশু খামারীদের কাছে এই প্রতিষ্ঠানকে একটি নির্ভরযোগ্য নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। পোল্ট্রি এবং গবাদিপশু খাদ্যে নারিশের সঠিক পুষ্টি এবং গুণগত মান নিশ্চিত করে প্রাণিসম্পদের স্বাস্থ্যকর উন্নয়ন এবং দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। এই নিবন্ধের মাধ্যমে আমরা নারিশ ফিডের বিভিন্ন প্রকার, বাজার মূল্য, গুণগত মান, চাহিদা এবং অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। আশা করি এই তথ্যগুলো আপনাদের উপকারী হবে এবং নারিশ ফিড সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে সহায়ক হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top