দুবাই, মরুভূমির মুক্তা, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ঝলমলে আকাশচুম্বী ভবন, বিলাসবহুল হোটেল, মনোমুগ্ধকর শপিং মল, এবং মরুভূমির অভিযান – দুবাই সকলের জন্যই কিছু না কিছু অফার করে।
বাংলাদেশ থেকে দুবাই ভ্রমণ সবসময়ই অনেকের স্বপ্ন। প্রাচীন প্রাচ্যের মরুশহর দুবাই তার আধুনিক স্থাপত্য, লাক্সারি শপিং এবং অভিজাত নৈশজীবনের জন্য বিখ্যাত। তবে, এই স্বপ্নের গন্তব্যে যেতে হলে, প্রথমে জানা দরকার দুবাই টুরিস্ট ভিসার দাম ও আবেদন প্রক্রিয়া। আসুন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে দুবাই টুরিস্ট ভিসা প্রাপ্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানি।
দুবাই টুরিস্ট ভিসার ধরন
বাংলাদেশ থেকে দুবাই ভ্রমণের জন্য টুরিস্ট ভিসা প্রয়োজন। ভিসার ধরণ, মেয়াদ এবং আবেদন প্রক্রিয়া অনুসারে ভিসার দাম ভিন্ন হতে পারে।
ভিসার ধরণ:
- সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা: এই ভিসা দিয়ে একবার দুবাই ভ্রমণ করা যাবে।
- মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা: এই ভিসা দিয়ে বারবার দুবাই ভ্রমণ করা যাবে। ভিসার মেয়াদের মধ্যে যতবার ইচ্ছা ভ্রমণ করা যাবে।
ভিসার মেয়াদ:
- ১৪ দিন: এই ভিসা দিয়ে দুবাইতে ১৪ দিন থাকা যাবে।
- ৩০ দিন: এই ভিসা দিয়ে দুবাইতে ৩০ দিন থাকা যাবে।
- ৯০ দিন: এই ভিসা দিয়ে দুবাইতে ৯০ দিন থাকা যাবে।
দুবাই টুরিস্ট ভিসার দাম কত
দুবাই পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। এর দৃষ্টিনন্দন আকাশচুম্বী বিল্ডিং, আধুনিক শপিং মল, এবং বিশাল মরুভূমি প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটককে আকৃষ্ট করে। টুরিস্ট ভিসার জন্য খরচ নির্ভর করে মেয়াদের উপর। সাধারণত ৩০ দিনের ভিসার জন্য খরচ পড়ে প্রায় ২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ অফার বা ডিসকাউন্টের মাধ্যমে কম খরচে টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়। টুরিস্ট ভিসায় সর্বোচ্চ ৩০ দিন থাকার অনুমতি দেয়া হয়, যা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাড়ানো যেতে পারে। এই ভিসার মাধ্যমে কাজ করা নিষেধ, শুধুমাত্র ভ্রমণের জন্যই এই ভিসা প্রযোজ্য।
এই দামগুলি ভিসার প্রকার এবং মোট দিনের উপর নির্ভর করে শুধু মাত্র সরকারি ভিসা খরচ সমূহ
দুবাই টুরিস্ট ভিসার আবেদন খরচ
ভিসার ধরণ | মেয়াদ | দাম (বাংলাদেশি টাকা) |
---|---|---|
সিঙ্গেল এন্ট্রি | ১৪ দিন | ৳ ৩৮,৫০০ |
মাল্টিপল এন্ট্রি | ৩০ দিন | ৳ ১৫,৪০০ |
মাল্টিপল এন্ট্রি | ৬০ দিন | ৳ ৭৫,৯০০ |
দুবাই বিমান ভাড়া কত
বিবরণী | টাকা (ইকোনমি ক্লাস) |
ঢাকা থেকে দুবাই | ৩৫,২৯১ টাকা |
চট্টগ্রাম থেকে দুবাই | ৩৬,২৯৪ টাকা |
সিলেট থেকে দুবাই | ৩৪,৯৫০ টাকা |
রাজশাহী থেকে দুবাই | ৩৭,৬৫০ টাকা |
ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া
- অনলাইন: দুবাই সরকারের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে।
- ট্রাভেল এজেন্সি: অনেক ট্রাভেল এজেন্সি দুবাই টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া সহায়তা করে।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- বৈধ পাসপোর্ট: পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ৬ মাসের জন্য বৈধ থাকতে হবে।
- সম্পূর্ণ পূরণ করা ভিসা আবেদন ফর্ম
- ছবি: সাম্প্রতিক দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ: ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ইত্যাদি।
- রাউন্ড ট্রিপ এয়ার টিকেট
- হোটেল বুকিং প্রমাণ
- ভ্রমণ বীমা: ভ্রমণের সময়কালের জন্য বৈধ ভ্রমণ বীমা।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা অন্যান্য আর্থিক দলিল
দুবাই টুরিস্ট ভিসার প্রসেসিং সাধারণত 3 থেকে 5 কার্যদিবস সময় নেয়, কিন্তু এটি মাঝে মাঝে বিভিন্ন কারণে দেরি হতে পারে। তাই, যদি আপনি একটি নির্দিষ্ট তারিখে দুবাই যাত্রা করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে আগে থেকেই ভিসা আবেদন করুন।
সাবধানতা
দুবাই টুরিস্ট ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সাবধানতা মেনে চলা উচিত:
- সকল দলিল সঠিকভাবে পূরণ করা এবং যাচাই করা।
- ভিসা আবেদনের সময় সঠিক তথ্য প্রদান করা।
- ভিসা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে দুবাই ছাড়া।
দুবাই টুরিস্ট ভিসা প্রাপ্তিতে ব্যর্থতার কারণ বিভিন্ন হতে পারে। অসম্পূর্ণ দলিল, ভুল তথ্য প্রদান, অপর্যাপ্ত আর্থিক প্রমাণ ইত্যাদি ভিসা প্রত্যাখ্যানের সাধারণ কারণ। তাই, সব দলিল সঠিকভাবে পূরণ এবং যাচাই করা উচিত। তবে সাধারণত সব কাগজ পত্র ঠিক থাকলে ভিসা রিজেকশন হই না ।
টিপস ও ট্রিকস
দুবাই টুরিস্ট ভিসা প্রাপ্তিতে সহায়ক কিছু টিপস:
- যাচাইকৃত এবং বিশ্বস্ত সোর্স থেকে ভিসা আবেদন করুন।
- সমস্ত দলিলের অরিজিনাল এবং কপি রাখুন।
- ভিসা আবেদনের আগে সকল দলিলের সঠিকতা নিশ্চিত করুন।
- আবেদন প্রক্রিয়ার সময় যে কোনো প্রশ্নের জন্য দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ রাখুন।
শেষ কথা
দুবাই একটি স্বপ্নের গন্তব্য হতে পারে যদি সবকিছু সঠিকভাবে পরিকল্পিত এবং প্রস্তুত করা হয়। আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে দুবাই ভ্রমণের পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে উপরে দেওয়া তথ্যগুলি আপনার ভ্রমণ প্রস্তুতির জন্য উপকারী হবে। সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি আপনাকে একটি সুখী এবং নির্বিঘ্ন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে।