সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা ২০২৪

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার

মধ্যপ্রাচ্যের কর্মসংস্থান বাজারে সৌদি আরব একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে আছে। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ সৌদি আরবে কাজ করার জন্য যান। বাংলাদেশীদের কাছেও সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় কর্মক্ষেত্র। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে কাজের সুযোগ খোঁজা এবং সেখানে যাত্রা করা হাজার হাজার মানুষের স্বপ্ন। এই স্বপ্নপূরণের পথে অন্যতম প্রধান ধাপ হলো সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা প্রাপ্তি।

২০২৪ সালে, সৌদি আরব কর্ম ভিসা প্রাপ্তির জন্য নতুন নিয়ম চালু করেছে, যেখানে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগের ন্যূনতম বয়স ২৪ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মীদের আকৃষ্ট করা এবং শ্রম বাজারের মান উন্নত করা। মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় মুসানেদ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে, যা বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও সহজ করে তুলতে সাহায্য করবে।

আরও পড়ুনঃ সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত

সৌদি আরবের ভিসা প্রকারভেদ

  • উমরাহ ভিসা: এই ভিসাটি মুসলমানদের জন্য যারা উমরাহ পালন করতে চান তাদের জন্য। এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত ৩০ দিনের জন্য বৈধ থাকে।
  • হজ ভিসা: এই ভিসাটি মুসলমানদের জন্য যারা হজ পালন করতে চান তাদের জন্য। এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত ৩০ দিনের জন্য বৈধ থাকে।
  • কোম্পানি ভিসা বা কর্ম ভিসা: এই ভিসাটি সৌদি আরবে কাজ করার জন্য। এটি একটি স্পনসরশিপের উপর ভিত্তি করে একটি দীর্ঘমেয়াদী ভিসা এবং সাধারণত এক বা দুই বছরের জন্য বৈধ থাকে।
  • ব্যবসায়িক ভিসা: এই ভিসাটি সৌদি আরবে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ভ্রমণকারীদের জন্য। এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত ৩০ দিনের জন্য বৈধ থাকে।
  • পর্যটন ভিসা: এই ভিসাটি সৌদি আরব ভ্রমণকারীদের জন্য পর্যটন উদ্দেশ্যে। এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত ৩০ দিনের জন্য বৈধ থাকে।
  • পরিবারের ভিসা: এই ভিসাটি সৌদি আরবে বসবাসকারী একজন ব্যক্তির স্বামী, স্ত্রী এবং নির্ভরশীল সন্তানদের জন্য। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত এক বা দুই বছরের জন্য বৈধ থাকে।
  • অবসর ভিসা: এই ভিসাটি ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের জন্য যারা সৌদি আরবে অবসর নিতে চান। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত এক বছরের জন্য বৈধ থাকে এবং এক বছরের জন্য নবায়ন করা যেতে পারে।
  • চিকিৎসা ভিসা: এই ভিসাটি সৌদি আরবে চিকিৎসা চিকিত্সা নেওয়ার জন্য। এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত ৯০ দিনের জন্য বৈধ থাকে।
  • ট্রানজিট ভিসা: এই ভিসাটি সৌদি আরবের মধ্য দিয়ে অন্য দেশে যাত্রা করার জন্য। এটি একটি স্বল্পমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত ৭২ ঘন্টার জন্য বৈধ থাকে।

সৌদি আরবে কাজ করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ভিসা প্রযোজ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কোম্পানি ভিসা। কোম্পানি ভিসা দুই ধরণের:

  • ইকামা: সৌদি আরবের কোনো কোম্পানিতে চাকরির জন্য এই ভিসা প্রয়োজন।
  • মুকাতাবা: সৌদি আরবের কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিভিত্তিক কাজের জন্য এই ভিসা প্রয়োজন।

আরও পড়ুনঃ সৌদি ১ রিয়াল কত টাকা

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার দাম কত

উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার মোট খরচ ২,০০০ থেকে ৪,০০০ রিয়াল (৭৯,৫০০ – ১,০৬,০০০ টাকা) এর মধ্যে । এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করলে খরচ বেশি হবে। তারা সরকারি ফি সহ আরে অতিরিক্ত চার্জ করে থাকে তবে যদি এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করলে ঝামেলা কম তাই সবাই এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করে থাকে । ভিসা প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচ বিভিন্ন ধরণের ভিসার জন্য বিভিন্ন বিভিন্ন খরচ । সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার দাম নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যেমন:

ভিসার ধরন ভেদে খরচ:

  • কাজের ভিসা: সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরণের কাজের ভিসা আছে, যেমন:
    • সাধারণ কাজের ভিসা: এই ভিসার জন্য খরচ ২,০০০ থেকে ৩,০০০ রিয়াল (৫৩,০০০ – ৭৯,৫০০ টাকা) এর মধ্যে।
    • উচ্চ-দক্ষ কর্মীর ভিসা: এই ভিসার জন্য খরচ ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ রিয়াল (৭৯,৫০০ – ১,০৬,০০০ টাকা) এর মধ্যে।
    • ঘরোয়া শ্রমিকের ভিসা: এই ভিসার জন্য খরচ ১,৫০০ থেকে ২,০০০ রিয়াল (৪০,০০০ – ৫৩,০০০ টাকা) এর মধ্যে।
  • ব্যবসায়িক ভিসা: এই ভিসার জন্য টাকা ২,০০০ থেকে ৩,০০০ রিয়াল (৫৩,০০০ – ৭৯,৫০০ টাকা) এর মধ্যে।
  • পর্যটন ভিসা: এই ভিসার জন্য খরচ ৪৪০ রিয়াল (১১,৬০০ টাকা) থেকে শুরু হয়।

অন্যান্য খরচ:

  • মেডিকেল পরীক্ষার খরচ: ৩০০ থেকে ৫০০ রিয়াল (৭,৯৫০ – ১৩,২৫০ টাকা)।
  • ভিসার স্ট্যাম্পিং ফি: ২০০ রিয়াল (৫,৩০০ টাকা)।

ভিসার প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি:

  • এজেন্টের মাধ্যমে: এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করলে খরচ বেশি হবে।
  • সরাসরি: সরাসরি ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করলে খরচ কম হবে।

এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা কোম্পানি ভিসার দাম কত ২০২৪

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসায় যাওয়ার জন্য সাধারণত তিন থেকে চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এই খরচের মধ্যে সব ধরণের প্রসেসিং ফি এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে

আরও পড়ুনঃ সৌদি আরবের কোম্পানি নাম

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা

সৌদি আরবে হাজার হাজার কোম্পানি রয়েছে যারা নিয়মিত বিদেশি কর্মীদের জন্য কাজের ভিসা প্রদান করে থাকে। তবে ভিসার ধরন এবং বেতনের পরিমাণ নির্ভর করে নির্দিষ্ট কাজের প্রকৃতি, অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার ওপর। সাধারণত, একজন সাধারণ কর্মীর বেতন শুরু হয় ২৫,০০০ টাকা থেকে, তবে অভিজ্ঞ কর্মীদের বেতন হতে পারে ৬০,০০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন পেশাদার যেমন প্রকৌশলী, চিকিৎসক, বা IT পেশাজীবীদের বেতন ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা চেক করার উপায়

যারা সৌদি আরবে চাকরির জন্য আগ্রহী এবং ভিসার অবস্থা যাচাই করতে চান, তারা সহজেই অনলাইনে তাদের ভিসার স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন। পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে সৌদি আরবের যেকোনো কোম্পানির ভিসা চেক করতে পারবেন। এর জন্য আপনি নিম্নলিখিত লিংক ব্যবহার করতে পারেন:
ভিসা চেক করুন

কিছু টিপস:

  • ভিসার জন্য আবেদন করার আগে বিভিন্ন কোম্পানির খরচ সম্পর্কে জেনে নিন।
  • এজেন্টের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করার আগে এজেন্টের খরচ সম্পর্কে জেনে নিন।
  • সরাসরি ভিসা প্রক্রিয়াকরণ করলে খরচ কমাতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ হজ্জ প্যাকেজ

শেষ কথা

সৌদি আরবে কাজ করার জন্য কোম্পানি ভিসা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসার প্রসেসিং ফি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন, কোম্পানি, ভিসার ধরণ, প্রসেসিং টাইম ইত্যাদি। সৌদি আরবে চাকরির জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই আপনি যে খাতে কাজ করতে চান সেই বিষয়ে পর্যাপ্ত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত। অনেক ক্ষেত্রেই অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার ভিত্তিতে বেতনের তারতম্য হয়ে থাকে। তাই, আপনার পছন্দসই কাজটি চিহ্নিত করুন এবং সেই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করুন। সঠিক প্রস্তুতি এবং পেশাগত উন্নয়নই সৌদি আরবে সফল ক্যারিয়ারের চাবিকাঠি হতে পারে।

ধন্যবাদ!

2 thoughts on “সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা ২০২৪”

  1. ana md badsha from bangladesh ana fi hevy laechan draivar awal sugul kuwat 25 ana malum sugul siara haf lory bass alhin saudia visa ati arubi kalam malum

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top