সোনার প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। সোনা শুধুমাত্র অলংকার হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না, বরং এটি বিনিয়োগের একটি জনপ্রিয় মাধ্যমও। তাই, স্বর্ণের দাম বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সোনা, দীর্ঘদিন ধরে মানুষের কাছে মূল্যবান ধাতু হিসেবে পরিচিত। এর সৌন্দর্য, টেকসই এবং মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য সোনা সার্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশেও সোনার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। গহনা তৈরি থেকে শুরু করে বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে সোনা ব্যবহার করা হয়।
সোনার দাম নির্ধারণ করে কে?
বাংলাদেশে সোনার দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বাজুস প্রতিদিন আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম, মার্কিন ডলারের বিনিময় হার এবং সরকারের নির্ধারিত করের উপর ভিত্তি করে সোনার দাম নির্ধারণ করে।
২২ ক্যারেট সোনার দাম কত
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষে, বাংলাদেশে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ৯০,৫৭১ টাকা। তবে বাজারে সোনার দাম প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়। যা বাংলাদেশের আজকের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট সোনার দাম ১,৩৭,৪৪৮ টাকা।
- ২২ ক্যারেট ১ গ্রাম সোনার দাম ১১,৭৮৪ টাকা ।
- ২২ ক্যারেট ১ সোনার দাম ১,৩৭,৪৪৮ টাকা ।
সোনার দাম ওঠানামার কারণ
- আন্তর্জাতিক বাজার: আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামের ওঠানামার সাথে সাথে বাংলাদেশের বাজারেও সোনার দাম পরিবর্তিত হয়। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারের ওঠানামাও সোনার দামকে প্রভাবিত করে।
- চাহিদা ও সরবরাহ: বাজারে সোনার চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্যহীনতা সোনার দামের ওঠানামার অন্যতম কারণ।
- অন্যান্য কারণ: বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ইত্যাদি কারণেও সোনার দাম ওঠানামা করতে পারে।
সোনা কেনার আগে কী কী বিষয় খেয়াল রাখা উচিত
- সোনার দাম: বিভিন্ন দোকানে সোনার দাম একটু একটু করে ভিন্ন হতে পারে। তাই, সোনা কেনার আগে বাজারের দাম সম্পর্কে ভালো করে খোঁজখবর নেওয়া উচিত।
- সোনার মান: সোনার বিশুদ্ধতা কতটুকু, তা যাচাই করে নেওয়া উচিত। হলমার্ক করা সোনা কেনাই উচিত। হলমার্ক হলো সোনার বিশুদ্ধতা নির্ধারণের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একটি চিহ্ন।
- কারিগরি: গহনা তৈরির কারিগরি ভালো কিনা, তা দেখে নেওয়া উচিত।
- বিশ্বাসযোগ্য দোকান: বিশ্বাসযোগ্য ও খ্যাতিমান দোকান থেকে সোনা কেনা উচিত।
সোনার বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুবিধা
ঝুঁকি:
- দামের ওঠানামা: সোনার দাম অনেক ওঠানামা করে। তাই, সোনার বিনিয়োগে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত।
- লিকুইডিটি: সোনা বিক্রি করা অন্যান্য বিনিয়োগের তুলনায় একটু কঠিন হতে পারে।
- সংরক্ষণ: সোনা নিরাপদে সংরক্ষণ করার জন্য খরচ করতে হয়।
সুবিধা:
- মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা: সোনা মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে একটি ভালো সুরক্ষা। দীর্ঘমেয়াদে সোনার দাম মুদ্রাস্ফীতির সাথে তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পায়।
- বৈশ্বিক মুদ্রা: সোনা সার্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য। বিশ্বের যেকোনো জায়গায় সোনা বিক্রি করা যায়।
- নিরাপদ বিনিয়োগ: সোনা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের তুলনায় অনেক নিরাপদ।
বাংলাদেশের বাজারে সোনার ভবিষ্যৎ
বিশ্বব্যাপী সোনার চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে দেশেও সোনার চাহিদা বাড়বে বলে আশা করা যায়। তাই, দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বাজারে সোনার দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
শেষ কথা
সোনা একটি মূল্যবান ধাতু যা দীর্ঘদিন ধরে মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে সোনা ভালো ঝুঁকি বৈশিষ্ট্য প্রদান করে। তবে, সোনার বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুবিধা সম্পর্কে ভালো করে জেনে বিনিয়োগ করা উচিত।