চার্জার ফ্যান এর দাম ২০২৪

চার্জার ফ্যান এর দাম

বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার অনিশ্চয়তার মধ্যে, চার্জার ফ্যান পরিবারের প্রতি ঘরের অপরিহার্য সম্পদ হয়ে উঠেছে । গরমের সময় মানুষের জন্য ফ্যান অপরিহার্য। বিদ্যুতের লোডশেডিং এর প্রবণতা থাকায় চার্জার ফ্যান দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। ২০২৪ সালে, এই গ্যাজেটের বাজার আরও প্রসারিত ও বৈচিত্রময় হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য নানান ধরণের সুবিধা ও দামের বিকল্প নিয়ে এসেছে। এই পোস্টে, আমরা বাংলাদেশে চার্জার ফ্যানের বাজার, দামের পরিসর, ব্র্যান্ডসমূহ, এবং ক্রেতাদের জন্য কেনাকাটার টিপস নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি বাংলাদেশে চার্জার ফ্যানের দাম এবং এর বৈচিত্র্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান, তাহলে এই ব্লগটি আপনার জন্য।

চার্জার ফ্যান কেন প্রয়োজন?

চার্জার ফ্যানের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি বিদ্যুৎ না থাকলেও ব্যবহার করা যায়। এই ফ্যানগুলোতে সাধারণত বড় আকারের ব্যাটারি থাকে, যা চার্জ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ না থাকলেও ফ্যান চালানো সম্ভব। লোডশেডিং হলে যেমন আপনার সেন্ট্রাল ফ্যান বা এসি বন্ধ হয়ে যায়, চার্জার ফ্যান তখন সহজেই ঘরের ভেতর বাতাস সরবরাহ করতে পারে। ফলে গরমকালে লোডশেডিংয়ের সমস্যার হাত থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া যায়। গরমকালে লোডশেডিংয়ের সমস্যায় আমরা সবাই প্রায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠি। বিশেষ করে প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে স্বস্তির নিশ্বাস পাওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায় চার্জার ফ্যান এক গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হয়ে ওঠে, যা বিদ্যুৎ চলে গেলেও বাতাস সরবরাহ করে আমাদের স্বস্তি দেয়।

চার্জার ফ্যান এর দাম

চার্জার ফ্যানের দাম বাংলাদেশে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ফ্যানের আকার, ব্যাটারি ব্যাকআপ, ব্র্যান্ড এবং অন্যান্য সুবিধার ওপর ভিত্তি করে এই দামের তারতম্য ঘটে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফ্যানের দাম ভিন্ন এবং প্রতিটি ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যানের বিশেষত্ব রয়েছে।

  • ছোট আকারের চার্জার ফ্যানের দামঃ বাংলাদেশে ছোট আকারের চার্জার ফ্যান ২০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। এগুলো সাধারণত মিনি চার্জার ফ্যান হিসেবে পরিচিত, এবং কম ব্যাটারি ধারণ ক্ষমতার কারণে স্বল্প সময়ের জন্য চলতে পারে। এ ধরণের ফ্যানগুলো হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় বিশেষ করে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য জনপ্রিয়।
  • বড় আকারের চার্জার ফ্যানের দামঃ বড় আকারের চার্জার ফ্যানের দাম শুরু হয় ১,৫০০ টাকা থেকে এবং ৮,০০০ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে। এই ফ্যানগুলোতে বৃহৎ ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়, যা দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। একাধিক ব্যক্তি একসঙ্গে এর বাতাস উপভোগ করতে পারেন। বড় ফ্যানের ফলে বেশি বাতাস পাওয়া যায় এবং লোডশেডিংকালীন আরামদায়ক হয়।

চার্জার ফ্যান এর দাম

ফ্যানের ব্র্যান্ডআকারমূল্য সীমা
ওয়ালটনবড়২০০০-৮০০০ টাকা
সিঙ্গারবড়১৫০০-৫০০০ টাকা
ভিশনমাঝারি৪০০০-৭০০০ টাকা
ডিফেন্ডারছোট থেকে বড়৫০০-৫০০০ টাকা
মিনি চার্জার ফ্যানছোট২০০-১০০০ টাকা

ওয়ালটন চার্জার ফ্যানের দাম ২০২৪

ওয়ালটন বাংলাদেশে জনপ্রিয় একটি ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড, এবং তাদের চার্জার ফ্যানগুলোর মানও খুবই ভালো। ওয়ালটন চার্জার ফ্যানের দাম সাধারণত ২,০০০ টাকা থেকে ৮,০০০ টাকার মধ্যে থাকে। ওয়ালটন ফ্যানগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং বড় ফ্যানের আকার। ফলে লোডশেডিং হলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই ফ্যান দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস উপভোগ করা সম্ভব।

ওয়ালটন চার্জার ফ্যান কেনার কারণ

  • দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ দেয়ার জন্য বড় ব্যাটারি।
  • অধিক পরিমাণে বাতাস সরবরাহ করতে সক্ষম।
  • টেকসই এবং ভালো মানের নির্মাণ উপকরণ।

ওয়ালটনের চার্জার ফ্যান বিভিন্ন সাইজ ও মডেলে পাওয়া যায়। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ছোট বা বড় ফ্যান বেছে নিতে পারেন। বাংলাদেশে ওয়ালটনের নিজস্ব শোরুম ছাড়াও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স শপ থেকে ওয়ালটন চার্জার ফ্যান কেনা যায়।

সিঙ্গার চার্জার ফ্যানের দাম ২০২৪

সিঙ্গার ব্র্যান্ডও বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়, বিশেষত তাদের চার্জার ফ্যানগুলো মানের জন্য পরিচিত। সিঙ্গার চার্জার ফ্যানের দাম ১,৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সিঙ্গার ফ্যানগুলোতে ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতা এবং আকর্ষণীয় ডিজাইন রয়েছে, যা অনেকের পছন্দের কারণ।

সিঙ্গার চার্জার ফ্যানের বৈশিষ্ট্য

  • লম্বা সময় চার্জ ধরে রাখতে সক্ষম।
  • টেকসই নির্মাণ উপকরণ এবং স্টাইলিশ ডিজাইন।
  • বড় আকারের ফ্যান এবং ব্যাটারি সুবিধা।

সিঙ্গার চার্জার ফ্যানের মাধ্যমে আপনি দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ সহ গরমকালে ঠাণ্ডা বাতাস উপভোগ করতে পারবেন। লোডশেডিং বেশি হয় এমন এলাকায় বসবাস করলে সিঙ্গার চার্জার ফ্যান একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।

ভিশন চার্জার ফ্যানের দাম ২০২৪

ভিশন ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যানের দাম সাধারণত ৪,০০০ থেকে ৭,০০০ টাকার মধ্যে হয়। ভিশন চার্জার ফ্যানগুলোর বিশেষত্ব হলো দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং উচ্চমাত্রার বাতাস সরবরাহ। এই ব্র্যান্ডের ফ্যানগুলোর ব্যাটারি এবং ফ্যানের আকার বড় হওয়ায় লোডশেডিংয়ের সময় দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা যায়।

ভিশন চার্জার ফ্যান কেনার কারণ

  • উচ্চমাত্রার ব্যাটারি ব্যাকআপ।
  • শক্তিশালী ফ্যান, যা বেশি পরিমাণ বাতাস সরবরাহ করে।
  • টেকসই এবং নির্ভরযোগ্য মান।

ডিফেন্ডার চার্জার ফ্যানের দাম ২০২৪

ডিফেন্ডার ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যানের দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫,০০০ টাকার মধ্যে। ডিফেন্ডার চার্জার ফ্যানগুলোতে ভালো মানের বাতাস পাওয়া যায় এবং ব্যাটারি ব্যাকআপের জন্য জনপ্রিয়। যাদের বাজেট কম এবং চার্জার ফ্যান থেকে ভালো বাতাস এবং লম্বা সময় ব্যাকআপ চান, তাদের জন্য ডিফেন্ডার ব্র্যান্ডের ফ্যান ভালো একটি অপশন হতে পারে।

ডিফেন্ডার চার্জার ফ্যানের বৈশিষ্ট্য

  • অধিক বাতাস সরবরাহের জন্য উন্নত ফ্যান।
  • কম বাজেটে ভালো মানের চার্জার ফ্যান।
  • সহজলভ্য এবং দীর্ঘস্থায়ী।

মিনি চার্জার ফ্যানের দাম ২০২৪

মিনি চার্জার ফ্যান বাংলাদেশে সাধারণত ২০০ থেকে ১,০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। মিনি ফ্যানগুলো ছোট আকারের এবং সহজে বহনযোগ্য, তাই ব্যক্তিগত ব্যবহার বা ছোট পরিসরে ব্যবহার উপযোগী। যদিও এদের ব্যাটারি ব্যাকআপ কম এবং ফ্যানের আকার ছোট, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কিছুটা স্বস্তি পেতে এই ফ্যানগুলো বেশ কার্যকর।

মিনি চার্জার ফ্যানের বৈশিষ্ট্য

  • বহনযোগ্য এবং হালকা ওজন।
  • স্বল্প সময়ের জন্য চার্জ ধরে রাখে।
  • কম খরচে অস্থায়ী সমাধান।

চার্জার ফ্যান কেনার সময় কী বিবেচনা করবেন

চার্জার ফ্যান কেনার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা উচিত। ভালো মানের এবং দীর্ঘস্থায়ী চার্জার ফ্যান কেনার জন্য নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে পারেন:

  • ১. ব্যাটারি ক্যাপাসিটিঃ ফ্যানের ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কতটুকু, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বড় ব্যাটারি মানে বেশি সময়ের ব্যাকআপ। ছোট ফ্যানের তুলনায় বড় ফ্যানে সাধারণত বড় ব্যাটারি দেয়া হয়, যা দীর্ঘ সময়ের জন্য চার্জ ধরে রাখতে সক্ষম।
  • ২. ফ্যানের আকারঃ বড় ফ্যান সাধারণত বেশি বাতাস সরবরাহ করতে পারে। যদি একাধিক ব্যক্তি ফ্যানের বাতাস উপভোগ করতে চান, তবে বড় আকারের চার্জার ফ্যান কেনাই উত্তম।
  • ৩. ব্র্যান্ডের মান ও রিভিউঃ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মধ্যে মানের তারতম্য থাকে। ওয়ালটন, সিঙ্গার, ভিশন এবং ডিফেন্ডার ব্র্যান্ডের ফ্যানগুলো বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় এবং রিভিউও ভালো। সস্তা দামেই ভালো ফ্যান কিনতে চাইলে এসব ব্র্যান্ডের ফ্যান যাচাই করে নিতে পারেন।
  • ৪. ওয়ারেন্টি ও বিক্রয়োত্তর সেবাঃ অনেক ব্র্যান্ড চার্জার ফ্যানের জন্য ওয়ারেন্টি দিয়ে থাকে। ওয়ারেন্টি থাকলে ফ্যান ব্যবহারে কোনো সমস্যা হলে সহজে সার্ভিস পাওয়া যায়। তাই ফ্যান কেনার আগে ওয়ারেন্টি চেক করা উচিত।

শেষ কথা

চার্জার ফ্যান হলো গরমকালে লোডশেডিংয়ের সময় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন দামে এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ ফিচারে উপলব্ধ। ওয়ালটন, সিঙ্গার, ভিশন এবং ডিফেন্ডার ব্র্যান্ডের ফ্যানগুলো মান এবং ব্যাটারি ব্যাকআপের জন্য ভালো পছন্দ হতে পারে। বাজেট এবং চাহিদার ভিত্তিতে ছোট থেকে বড় আকারের ফ্যান বেছে নিতে পারেন। লোডশেডিং বেশি হয় এমন এলাকায় বসবাস করলে ওয়ালটন বা সিঙ্গারের মতো ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান ক্রয় করে নিতে পারেন, যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ঠাণ্ডা বাতাস সরবরাহ করবে।

এই গাইডটি আপনাকে সঠিক চার্জার ফ্যান বেছে নিতে সাহায্য করবে বলে আমরা আশা করি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top