
প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বহু নাগরিক বিভিন্ন কারণে সৌদি আরব ভ্রমণ করেন। জীবিকার উদ্দেশ্যে, হজ্ব পালন, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বা ব্যক্তিগত কারণে বাংলাদেশের অনেক নাগরিক সৌদি আরব গমন করেন। এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে যাতায়াতের জন্য বিমান ভাড়ার বিস্তারিত তুলে ধরবো।
সৌদি আরবের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিমান যাতায়াত
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যাতায়াতের জন্য শুধুমাত্র বিমানের উপর নির্ভর করতে হয়। বিভিন্ন প্রাইভেট এবং সরকারি এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে ফ্লাইট পরিচালনা করে। সৌদি আরবের উল্লেখযোগ্য কিছু শহর যেমন জেদ্দা, রিয়াদ এবং দাম্মাম, যেখানে বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিমান ভাড়া কত
পবিত্র রমজান মাস এবং হজ্ব মৌসুমের কারণে বিমান ভাড়া সাধারণত বৃদ্ধি পায়। ২০২৪ সালে, হজ্ব উপলক্ষে বিমান ভাড়া পূর্বের তুলনায় কিছুটা বেশি। বিমানের ক্লাস অনুযায়ী ভাড়া পরিবর্তিত হয়।
ঢাকা থেকে জেদ্দা বিমান ভাড়া
ঢাকা থেকে জেদ্দা রুটে যাত্রীদের জন্য বিমান ভাড়ার হার ভিন্ন হতে পারে। নিচে ইকোনোমিক ক্লাস এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়ার বিবরণ দেওয়া হলো:
ইকোনোমিক ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ৪৫,০০০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ৮৫,০০০ টাকা
বিজনেস ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ১,১০,৫০০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ১,৮০,৮৫০ টাকা
ঢাকা থেকে রিয়াদ বিমান ভাড়া
ঢাকা থেকে রিয়াদ রুটের জন্য বিমান ভাড়ার পরিসর নিচে দেওয়া হলো:
ইকোনোমিক ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ৪৮,০০০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ৮৯,০০০ টাকা
বিজনেস ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ১,১৫,৪৫০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ১,৯৫,০০০ টাকা
ঢাকা থেকে মদিনা বিমান ভাড়া
ঢাকা থেকে মদিনা রুটের বিমান ভাড়ার পরিসর নিম্নরূপ:
ইকোনোমিক ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ৪৬,৮৯০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ৯৪,৫০০ টাকা
বিজনেস ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ৯৯,৫৯০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ১,৭৮,০০০ টাকা
ঢাকা থেকে দাম্মাম বিমান ভাড়া
ঢাকা থেকে দাম্মাম রুটের জন্য বিমানের ভাড়ার হার নিম্নরূপ:
ইকোনোমিক ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ৪৪,৯০০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ৮৮,০৯০ টাকা
বিজনেস ক্লাস ভাড়া
- সর্বনিম্ন ভাড়া: ১,০৫,৬৯০ টাকা
- সর্বোচ্চ ভাড়া: ১,৯৯,৪৫০ টাকা
বিমান ভাড়া বৃদ্ধির কারণ
- পবিত্র রমজান ও হজ্ব মৌসুমে ভাড়া বৃদ্ধিঃ প্রতি বছর পবিত্র রমজান মাস এবং হজ্ব মৌসুমে বিমান ভাড়ার বৃদ্ধি স্বাভাবিক। কারণ এই সময়ে মুসলমান ধর্মাবলম্বীরা হজ্ব ও উমরাহ পালন করতে সৌদি আরব ভ্রমণ করে থাকেন। এই সময়ে ফ্লাইটের চাহিদা বেড়ে যায়, ফলে বিমান সংস্থাগুলো তাদের টিকেটের মূল্য বৃদ্ধি করে।
- উন্নত সেবা এবং সুবিধাসমূহঃ বিজনেস ক্লাস এবং প্রিমিয়াম ক্লাসের টিকিটের মূল্য বেশি কারণ এই ফ্লাইটগুলোতে উন্নত সেবা এবং সুবিধাসমূহ প্রদান করা হয়। উন্নত সিটিং আরাম, খাবার ও পানীয়, উচ্চমানের বিনোদন সুবিধা ইত্যাদি কারণে এই শ্রেণির টিকিটের মূল্য বেশি হয়ে থাকে।
- ভাড়ার তারতম্যঃ এয়ারলাইন্সের ভাড়া ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে বিভিন্ন কারণে। যেমন: ফ্লাইটের সময়, বুকিং সময়কাল, এবং অন্যান্য সেবা সুবিধা। আগে থেকে টিকেট বুকিং করলে সাধারণত কম ভাড়ায় টিকেট পাওয়া যায়।
জনপ্রিয় এয়ারলাইন্স
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য কয়েকটি জনপ্রিয় এয়ারলাইন্স হল:
- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
- সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স
- এমিরেটস এয়ারলাইন্স
- ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স
- কুয়েত এয়ারওয়েস
- এয়ার এরাবিয়া
- ওমান এয়ারলাইন্স
প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য পরামর্শ
যারা প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক সৌদি আরবে কাজ করেন এবং ছুটির সময় দেশে ফিরে আসতে চান, তাদের জন্য পরামর্শ হলো:
- আগে থেকে টিকেট বুকিং করাঃ টিকেটের মূল্য কম রাখতে চাইলে আগে থেকে টিকেট বুকিং করা উচিত। সাধারণত এক মাস আগে টিকেট বুকিং করলে তুলনামূলক কম দামে টিকেট পাওয়া যায়।
- বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিটের মূল্য তুলনা করাঃ ভ্রমণের আগে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিটের মূল্য তুলনা করে দেখতে পারেন। এতে সেরা অফার পেতে সাহায্য হবে এবং ভ্রমণের খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
- বিশেষ অফার এবং ডিসকাউন্টঃ অনেক এয়ারলাইন্স সময়ে সময়ে বিশেষ অফার এবং ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। এই ধরনের অফার সম্পর্কে অবগত থাকুন এবং সম্ভব হলে সেই সুযোগগুলো কাজে লাগান।
শেষ কথা
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যাতায়াতের জন্য বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ও তাদের ভাড়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হলো। প্রতিনিয়ত বিমান ভাড়া পরিবর্তিত হয়, তাই সর্বদা আপডেট ভাড়া সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথে থাকুন। আশা করি এই তথ্যগুলো আপনার জন্য উপকারী হবে। যদি এই পোস্টটি আপনার জন্য উপকারী মনে হয়, তাহলে অনুগ্রহ করে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।