
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ মূলক উৎসব ভাতা, যা “ঈদ বোনাস” নামেও পরিচিত, প্রতি বছর বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসী সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক বেতনের গুণফলে প্রাপ্য হয়। এই ভাতার কাঠামো ধর্মভিত্তিক পার্থক্য ও সময়াভেদে পরিবর্তিত হয়েছে। বর্তমান নিয়মাবলী ও তার কার্যক্রমে কী পরিবর্তন এসেছে এবং কীভাবে পর্যালোচনা করা যায়—সেটি বিস্তারিতভাবে আলোচিত হবে।
উৎসব ভাতা প্রদানের নিয়ম ২০২৫
মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য
- ১৯৮৪ সালের জুলাই–১৯৮৮ সালের জুনে — মাসিক বেতনের ৫০% হিসেবে, দুই ঈদে ভাতা দেওয়া হতো।
- ১৯৮৮ সালের জুলাই থেকে অগ্রবর্তী — মাসিক বেতনের ১০০% হারের ভাতা উৎসবের নিয়মে ধরা হয়।
হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর জন্য
- ১৯৮৪–১৯৮৮ — মাসিক বেতনের ১০০% হারে উৎসব ভাতা।
- ১৯৮৮–বর্তমান — মাসিক বেতনের ২০০% হারে ভাতা প্রাপ্য, যার মধ্যে:
- দূর্গাপূজা → হিন্দুদের জন্য
- পূর্ণিমা উৎসব → বৌদ্ধদের জন্য
- খ্রিস্টমাস → খ্রিস্টানদের জন্য
👉 ১৯৮৪–১৯৮৮ থেকে ২০০% নিয়মের পরিবর্তন হলে মনে রাখতে হবে — এটি একই ভাতার দুইগুণ বোনাস হিসেবে বিবেচিত হয়নি; বরং ধর্মবিশেষে ব্যবস্থাপনাগত সামঞ্জস্য।
২০২৫ সালের সংশোধিত আদেশ নবনিযুক্ত হাতে পুরো মৌলিক বেতন
অতিরিক্ত সুবিধা – নবনিযুক্ত ও নিয়োগের দিন
- নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা, যদি কোন ধর্মীয় উৎসবের তারিখের আগের যেকোনো তারিখে যোগদান করে, তবে পুরো মাসিক মূল বেতন ভাতা হিসেবে অর্জন করবেন।
- আগের নিয়মে বলা হতো: “যে মাসে উৎসব হবে, সেই মাস বা পূর্ববর্তী মাসে যোগদান করেন—তবে পূর্ণ বেতন ভাতা হিসেবে পাবেন।”
বর্তমান আদেশে তা আরও পরিষ্কার করা হয়েছে।
সময়ভিত্তিক কার্যক্রম
- ধরা যাক কেউ উৎসব মাসে যোগদান করেছে এবং আগে পুরো বেতন পাননি—তবে নেয়া বেতন ও উৎসব মাসে তার প্রাপ্য বেতনের মধ্যে যা বেশি সে–ই দিতেই হবে।
বিশেষ পরিস্থিতিতে ভাতা ৯টি মূল পয়েন্ট
১. অবসরকালীন ছুটি
- এই ছুটিতে যে বেতন ও প্রাপ্য ‘subsistence grant’ ছিল, তার ভিত্তিতেই ভাতা চালু রাখা হয়।
অর্থাৎ, পূর্বে আহরিত বেতন বা গরিব ভাতা কাজে ধরা হয়।
২. নিয়োগভিত্তি কর্মচারীদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা
- নিয়মিত নিয়োগ (Confirm, Contract, Contingent, Work-charge) গ্রহণযোগ্য মনে হবে।
- কিন্তু নির্ধারিত মজুরি ভিত্তিক কন্ট্রাক্ট বা দৈনন্দিন মজুরিভিত্তিক, যেমন দিনগণিত ওয়ার্কচার্জ, ঐসব ক্ষেত্রে ভাতা পাওয়া যাবে না।
৩. ভূতাপেক্ষিক বেতন বৃদ্ধি
- আগের মাসে বা আগের সময়ে পেছনে কিছু হারে বেতন বাড়লে — সেই বৃদ্ধি থেকে ভাতা হিসেবে কিছু পাওয়া যাবে না।
৪. সাময়িক বরখাস্ত
- বেতন বেতন যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নয়, বরখাস্তের সময় পরে যদি ডিউটি হিসেবে গণ্য হয়—তবে সাম্য বিধান থাকলে ভাতা পাওয়ার অধিকার আবার খোলা।
৫. উৎসব-মাসে নতুন নিয়োগ
- যদি নতুন নিয়োগ উৎসবের ওই মাসের যেকোনো তারিখে হয়ে থাকে, উৎসবের দিন কার আদর্শ বেতনে ভাতা পাবেন।
৬. বার্ষিক বর্ধিত বেতন
- উৎসবমাসে বছরে বার্ষিক বর্ধিত বেতন পেলে, সেই বেতন উৎসবের দিন ভাতার জন্য উভয় ভিত্তি হিসেবে ধরা হবে।
৭. অসাধারণ ছুটিতেও
- কোনো ধর্মীয় উৎসব–উপলক্ষে অসাধারণ ছুটি নিলে সাধারণ উৎসব ভাতা বলা বন্ধ—অর্থাৎ, ঐ সময় ভাতা পাওয়া যাবে না।
৮. মৃত্যু-ঘটনার বোনাস
- কোন কর্মচারীর মৃত্যু উৎসবের পরেও/আগেও হলে, তার পরিবারের হাতে ঐ মৌলিক উৎসবভাতা পৌঁছে যাবে।
৯. অবসরে যাওয়ার মাসেই উৎসব
- অবসর পদে পতিত হলে, নগদ উৎসব ভাতা পাবেন সেই শেষ কর্ম—এর মাসে। (এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে ৬ নভেম্বর ২০০৪ থেকে।)
ধরা যাক — ২০২৫ সালের উদাহরণ
উদাহরণ ভিত্তিক ভাতা হিসাব
- মুহাম্মদ উদ্দিন, ১৪ মে ২০২৫ তারিখে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন।
- ঈদুল–আযহা অনুষ্ঠিত হচ্ছেন ১৭ জুন ২০২৫-তে।
- যোগ্যতা: নবনিযুক্ত → পুরো মাসের মৌলিক বেতন ভাতা হিসেবে পাবেন, কারণ তিনি ঈদের আগেই যোগ দিয়েছেন।
- রূপা দেবী, হিন্দু কর্মকর্তা, সুযোগ পেয়েছেন দুর্গাপূজায়।
– দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে ২ অক্টোবর ২০২৫।
– তিনি ২০ সেপ্টেম্বর থেকে চাকুরিতে যোগদান করেছেন, বেতন শুরু করেছেন অক্টোবর থেকে।
– প্রকৃত বেতন (সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর যা বেশি) অনুসারে ভাতা পাবে।
অগ্রগামী অবসর ও মৃত্যুর পর
- যদি কেউ মে’এ অবসর গ্রহণ করে এবং জুনে ঈদ হয় — তবে তিনি জুন মাসের ভাতা পাবেন।
- তেমনি, জুনে যদি তাঁদের মৃত্যু ঘটে, পরিবারের হাতে ভাতা পৌঁছে যাবে।
মাহাত্ম্য ও বাস্তবায়ন কেন্দ্রে রাখা বাধ্যতা
- ওয়ান-টাইম উৎসব ভাতা সরকারি কর্মীদের উপর আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসেবে বিবেচিত, ফলে দপ্তরীয় নিয়ম বা SOP–এর অংশ হয়ে গিয়েছে।
- ফায়¬ন্যান্স ডিপার্টমেন্ট, খাতে “ভাতা” হিসেবে মান্য করে, নিশ্চিত করে বেতনের মান ঠিক রেখে দেওয়া।
প্রধান আপডেট ২০২৫ সালের রিভিশন কি নিয়ে এসেছে?
- নির্ভুল স্পষ্টতা: নবনিয়োগ ও সম্পূর্ণ মৌলিক বেতনের মধ্যে স্পষ্ট সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে। পূর্বের আদেশে ‘যে মাসে যোগদান করেছেন…’ → নতুন আদেশে “উৎসবের আগে-বািগে” স্পষ্টভাবে নির্ধারণ।
- নির্দিষ্ট টার্গেট: সময় অনুসারে ‘যে বেতন বেশি’ → সেই বেতন হিসাবেও প্রাপ্যতা নিশ্চিত।
- অতিরিক্ত বেতনের ক্ষেত্রে ভুলভাবনা বন্ধ: মহামূল্য বৃদ্ধি হলে পুর্নভেতন ফর্মুলা ভাঙবে না।
কেন “ব্যাসিক বেতন” প্রাধান্য পায়?
- উৎসব ভাতা মৌলিক বেতন ভিত্তিক ইনকাম–বোনাস, সাধারণত বেসিক + ইন্সটলমেন্ট ছাড়াই নির্ধারিত হয়।
- হাউজ ভাড়া, মেডিক্যাল ভাতা না মিলে শুধুমাত্র বোনাস মূলমাত্রা হিসেবে কর্মক্ষমতার স্বাধীনতাও প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রমাণ ও রেফারেন্স
আদেশ | বিষয় | তারিখ |
---|---|---|
অম-অবি(বা)-৪-এফ, বি-১২-৮৪ (অংশ)/১১৯ | ঈদ ভাতা ১৯৮৪–১৯৮৮ | ৪–৯–১৯৮৪ |
ম, এফ/ এফ-ডি(ইমপ্লি)-৪-এফ-বি–১২/৮৪/১১৫ | বরখাস্ত, পুনঃদায়িত্ব | ৩০–০৯–১৯৮৫ |
এম, এফ/এফডি(ইমপ্লি)-৪-এফ বি/১২/৮৫/৪৪ | নবনিযুক্ত নিয়ম | ১১–৬–১৯৯০ |
অম/অবি/(বাস্ত ‑৪) উ:ভাতা–১০/৯২/৩২ | বার্ষিক বর্ধিত বেতন | ০৬–০৬–১৯৯২ |
সিএজি/পদ্ধতি–১/১৬১/৫৬৬ | মৃত্যু-পরবর্তী সুবিধা | ২৩–৬–১৯৯৮ |
অম/অবি/বিধি–১/চা:বি:–৬/২০০৪/১৮৪ | অবসরে যাওয়ার মাসে ভাতা | ০৬–১১–২০০৪ |
শেষ কথা
উৎসব ভাতা ২০২৫–এর আলোচনায় স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে — নতুন নিয়মে অধিক স্বচ্ছতা, বেতন হিসেব ক্ষেত্রে স্বচ্ছ মাননীতি, ও নবনিযুক্তদের জন্য সমতার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একাধিক ক্ষেত্রে বিধিসংক্রান্ত দ্বিধা দূর হয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী “যে বেতন বেশি” → তার ভিত্তিই ভাতা গণ্য হবে – যা সার্বিকভাবে স্বার্থনিষ্ঠ ও যুক্তিযুক্ত। যেহেতু এটি সরকারি কর্মচারীদের আর্থিক নিরাপত্তা ও উৎসবের আনন্দময় মুহূর্তে সহযোগিতা নিশ্চিত করে, তা কর্মকর্তা ও কর্মচারী উভয়েরই জন্য প্রকাশ করা যায়। প্রশাসনিক স্তরে এটিকে আরও কার্যকর ও স্থায়িত্বপূর্ণ প্রয়োগে নিয়োগপ্রক্রিয়া এবং ভ্যাটার-পলিসি উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সরকারি চাকুরিতে যোগদানের পর উৎসব ভাতা প্রাপ্তির নতুন নিয়মটি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী প্রমাণিত হবে। এটি কেবল তাদের আর্থিক সাপোর্টই প্রদান করবে না, বরং তাদের মনোবলও বৃদ্ধি করবে, যা সামগ্রিক কর্মক্ষমতার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ভবিষ্যতে, এই ধরনের নতুন নিয়ম ও সংশোধনীগুলো কর্মচারীদের কর্মস্থলে আরও আনন্দদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
যদি বিরতির পর কর্মস্থলে ফিরে ডিউটি গণ্য হয় এবং ডিউটি–বেতন চালু হয় — তবে সেই বেতন + ভাতা নিয়ে বোনাসের হিসাব প্রযোজ্য।
সরকার নির্ধারিত স্থায়ী স্কেল বেতনাধিকারী কর্মীদের জন্য বৈধ সেটিং, অন্যদিকে দিন ভাইবেতন প্রশাসনিক নিরীক্ষায় নিয়মানুগতা হারায়।
উৎসবের মাসেই যদি কর্মচারীর মৃত্যু হয়— ভারতের বেতন+ভাতা পরিবারকে প্রদান করা রাষ্ট্রীয় রুপরেখায় বাধ্যতামূলক।
উৎসবের মাসের পূর্বের পর যত দ্রুত যোগদান হোক না কেন — পুর্নমূল বেতনেই ভাতা পাওয়ার গ্যারান্টি।
সরকারি নীতি শুধু ‘ঈদ, দূর্গাপূজা, পূর্ণিমা, খ্রিস্টমাস’-এই ৪টি জাতীয় ধর্মানুক্রমিক উৎসব কভার করে। অন্যান্য উৎসব অন্তর্ভুক্ত নয়।